রামুতে যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে ঈদে মিলাদুন্নবী সা: পালিত….
রামুতে যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা:) পালিত হয়েছে। সোমবার (১৬ই সেপ্টেম্বর) ঈদে মিলাদুন্নবী (সা:) উপলক্ষ্যে আনজুমান-এ নকশবন্দিয়া মুজাদ্দেদিয়া বাংলাদেশ কক্সবাজার ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআ’ত রামুর যৌথ ব্যবস্থাপনায় সকাল ৯ টায় আজিমুশশান জশনে জুলুস (র্যালি) বের করা হয়।
এসময় জুলুসে আগত মুসল্লীদের মুখে নানা ধর্মীয় স্লোগান ও কালেমা খচিত পতাকা হাতে রামু উপজেলা পরিষদ চত্বর হতে শুরু হয়ে র্যালিটি রামুর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে রামু হাসপাতাল গেইট সংলগ্ন মাসুমিয়া ইসলামিয়া সুন্নিয়া মাদরাসা ও এতিমখানা মাঠে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা:) এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য এবং রাসুল (সা:) এর জীবন চরিত্র নিয়ে আলোচনা ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও আনজুমান-এ নকশবন্দিয়া মুজাদ্দেদিয়া বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলার সভাপতি অধ্যক্ষ আল্লামা মুফতি সৈয়্যদ মুহাম্মদ উল্লাহ নকশবন্দীর সভাপতিত্বে এবং ছদারতে অনুষ্ঠিত মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজারকুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুফিজুর রহমান মুফিজ,উদ্বোধক ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক আবুল বশর বাবু এবং প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট ইসলামিক আলোচক মুফতি আবদুল আজিজ রজভী।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, আইয়্যামে জাহেলিয়াতের সময়ে আরবরা ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত বর্বর, বেদুঈন, যাযাবর, শিক্ষা ও তমুদ্দিনের আলো থেকে বঞ্চিত একটি জাতি। যেখানে অন্যায় জুলুম ও অনৈতিকতার সয়লাবে চারিদিকে মনুষ্যত্ব ভুলুন্ঠিত হচ্ছিল । তখনো মানবজাতি আদিম জাহেলিয়াতের ঘুম থেকে জাগেনি। ঠিক সেই সময় অরাজকতার ঘুটঘুটে অন্ধকারে আকস্মিকভাবে জ্বলে উঠলো আলোক মশাল। সভ্যতার সূর্যোদয়ের দায়িত্ব নিয়ে ৫৭০ সনের ১২ই রবিউল আওয়াল পৃথিবীতে আবির্ভূত হলেন সমগ্র মানবজাতির মুক্তির দূত হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)। তাঁর জাদুর ছোঁয়ায় নবুওয়াতের মাত্র ২৩টি বছরে আরবরা বিনির্মাণ করলো এক নতুন পৃথিবী। জীবনের ক্ষতস্থান থেকে যে উৎকট দুর্গন্ধ বের হচ্ছিলো তা রাসুল (সাঃ) এর পরশে পরিবর্তিত হয়ে সুবাসিত আলোকবর্তিকায় পরিণত হলো। তাই সামাজিক অবক্ষয় রোধ, অন্যায়-জুলুম ও অনৈতিকতার হাত থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করে ইনসাফ, শান্তিময় ও সমৃদ্ধশালী করার জন্য আমাদেরও রাসুল (সাঃ) এর আদর্শকে অনুসরণ করতে হবে।
আনজুমান-এ নকশবন্দিয়া মুজাদ্দেদিয়া বাংলাদেশ রামু উপজেলা শাখার সহ সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেকের সঞ্চালনায় মাহফিলে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জুলুস প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক মাওলানা দানেসুল আলম।
ঐতিহাসিক ১২ রবিউল আউয়াল পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা:) উপলক্ষে আয়োজিত মাহফিলে মহানবীর আত্ম- জীবনীর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আরও আলোচনা করেন- মুফতি আবদুর রশিদ হক্কানী,মুফতি এস এম আবদুল্লাহ শাহেদ,হাফেজ মোহাম্মদ আবদুল জলিল,মাওলানা আবদুল গনি,মাওলানা খাজা মোহাম্মদ বাকিবিল্লাহ, মাওলানা রেজাউল করিম,মাওলানা তারেকুল ইসলাম নূরী,এস এম নিয়ামত উল্লাহ,এস এম আবরারুল হক,মাওলানা রমিজ আহমদ,মাওলানা ফিরদাউসুল মুনির,অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মকর্তা ফিরুজ,মাওলানা জামাল উদ্দিন,মাওলানা আবদুস সালাম সহ নকশবন্দিয়া মুজাদ্দেদিয়া বাংলাদেশ কক্সবাজার ও রামু উপজেলার নেতৃবৃন্দ ও সর্বস্তরের মুসলিমজনতা জুলুসে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও জুলুস ও আলোচনা সভা শেষে মিলাদ, কিয়াম, মুনাজাত ও তাবাররুক বিতরণের মধ্য দিয়ে মাহফিল সমাপ্ত হয়।