উত্তরা আবাসিকহোটেল মাদক জুয়া নারী দেহ ব্যবসা
ঢাকা সিটির উত্তরায় হাউজ বিল্ডিং সোনারগাঁও জনপদ রুটে বাটা শোরুম এর তিন তালায় আবাসিকহোটেল উত্তরা
গেস্ট হাউস মোলহোতা রাসেল ও ফারুক গঙ্গরা। তিনতলায় দীর্ঘদিন যাবত অসামাজিক কার্যকলাপ মাদক জুয়া খেলা চলছে প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করছে এলাকায় ব্যাপক হারে অপরাধ বেড়েই চলছে হোটেলেই অসামাজিক কার্যকলাপ মাদক দেহ ব্যবসা দীর্ঘদিনের এসি/নন এসি। তাতে যুক্ত করা দুটা বা একটা মোবাইল নম্বর। ছোট্ট করে হোটেল কক্ষের ছবি। কোনোটায় গোলাপফুল বা ইন্টারনেট থেকে নামানো মেয়ের ছবিও দেয়া। কিন্তু সেসব হোটেল বা গেস্ট হাউজের কোনো ঠিকানা উল্লেখ নেই। শুধু লেখা এলাকার নাম। কোনোটায় লেখা থাকে- আসার আগে ফোন দিন।
কার্ডের সূত্র ধরে এক নম্বরে ফোন দেয়া হলে বললেন, কতোদূর আছেন? তিনি ফোনে ডিরেকশনও দিলেন। বললেন, সোজা উত্তরা হাউজ বিল্ডিং আসুন। তার কথামতো সেখানে গেলে আগে থেকেই প্রস্তুত থাকা কয়েকজন পিছু নেয়। কার্ডের নম্বরওয়ালা সে লোক পুনরায় ফোনে বললেন, এই যে একটু ডানের বিল্ডিংয়ের দিকে তাকান। তিনি জানালা দিয়ে হাত ইশারা করছেন। পৌঁছতেই ঘিরে ধরলো অন্তত ছয়-সাতজন। তারা বললেন, ভাইয়ের কাছে যাবেন? আসেন। উপরে গেলে সেই কথিত ‘ভাই’ প্রশ্ন করলেন, কেমন বয়সী মেয়ে চান? স্কুল-কলেজ-ভার্সিটি বা যে শহরের চান সব আছে। বলেই তিনি পেছনে তাকাতে বললেন। ১৫-২০ জন নানান বয়সী মেয়ে সেখানে বসে আছে। সরাসরি অফার করে বসলেন তিনি। চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা লাগবে। চাইলে সারারাত থাকতে পারবেন। এমন আরও অফারই তিনি করলেন।
জানতে চাওয়া হলো- প্রকাশ্যে আবাসিক হোটেলের কথা বলে এগুলো অসামাজিক কাজ চালাচ্ছেন। কেউ বাধা দেয় না? কার এত ক্ষমতা। ‘বড় ভাই’ আছে না? তবে তারা তাদের সেই ‘বড় ভাইয়ের’ নাম বললেন না। তাদের ভাষ্যমতে, সবই নাকি ম্যানেজ করা থাকে। তবে কার্ডে এসব ‘ভাই’দের আসল নাম দেয়া থাকে না। এরা প্রকৃতপক্ষে যৌনকর্মীদের দালাল। এভাবে হোটেলের কথা বলে যৌনকর্মীদের কাছে নিয়ে যায়। কখনো বা সরাসরি অফার করে বাসায় সাপ্লাই দেয়ারও।
কার্ডে কেন হোটেলের ঠিকানা দেয়া থাকে না? বললেন, ঠিকানার দরকার পড়ে না। নিজেরাই গিয়ে নিয়ে আসি কাস্টমারদের। যুবকদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তাদের কেউ বাধা দেয় কিনা। বাবর নামের একজন বললেন, কে বাধা দেবে? বাবর যখন কথাগুলো বলছিলেন তখন আরও পাঁচ-ছয়জন এসে ক্ষিপ্ত হয় এই প্রতিবেদকের ওপর। এখান থেকে যান বলছি। ডিস্টার্ব করবেন না। তাদের দাপট সত্যি বেশ ভয়ঙ্কর। জুটে গেল আরও জন দশেক তরুণ। সঙ্গে সঙ্গে আরেকজন এসে তাদের অভয় দিতে থাকলো। এইখানে তোদের কেউ কিছু বলবে না। নির্ভয়ে কার্ড দিয়ে যা। তার কথা মতো বাবর ও কয়েকজন মিলে কার্ডগুলো ওভারব্রিজের দেয়ালে সাজাতে লাগলেন। এই কাজে ১০-১৫ বছর বয়সী কিশোরও রয়েছে। অনেক যুবক ঢাকায় এসে এসব কার্ড বিলির কাজে যুক্ত হয়ে পড়ে।
এদেরই একজন জানান, কার্ড বিলির বিনিময়ে দিনে চার-পাঁচশ টাকা পান জনপ্রতি। অসুবিধা হলে শেল্টার দেয় বড় ‘ভাই’য়েরা।
এসব কার্ডে যাদের নাম উল্লেখ করা থাকে তারা মূলত দালাল। এই দালালদের যারা নিয়ন্ত্রণ করেন তাদের নাম কেউ প্রকাশ করে না।