সাতক্ষীরায় জলাশয় সংকটে পাট জাগ দিতে পারছেন না চাষীরা
মিহিরুজ্জামান সাতক্ষীরাঃ
সাতক্ষীরায় গত মৌসুমের তুলনায় এবার পাটের আবাদ বেড়েছে। এরই মধ্যে বেশির ভাগ পাট কাটা শেষ হয়েছে। তবে জলাশয় সংকটে পাট জাগ দিতে পারছেন না চাষীরা। অল্প কিছু জলাশয় থাকলেও সেখানে পানিফল চাষ করার কারণে পাট জাগ দেয়া যাচ্ছে না। সময়মতো পাট জাগ দিতে না পারলে ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কা করছেন চাষীরা।
কৃষককে বিকল্প উপায় বের করে দ্রুত পাট পচানোর পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ। সে ক্ষেত্রে পাটের আঁশ ছাড়িয়ে সংক্ষিপ্ত পরিসরে পচাতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
সদর উপজেলার বাবুলিয়া গ্রামের পাটচাষী ওয়াজেদ আলী, মনিরউদ্দিন সরদার ও জেহের সরদার জানান, চলতি মৌসুমে তারা একেক জন তিন-চার বিঘা জমিতে পাট চাষ করেন। প্রায় এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে তারা পাট কেটেছেন। আশপাশে কোনো উন্মুক্ত জলাশয় বা ডোবা না থাকায় পাট জাগ দিতে পারছেন না। তাদের গ্রাম থেকে নদী বা খালের দূরত্ব অনেক বেশি। সেখানে নিয়ে জাগ দিতে গেলে পরিবহন খরচ বেশি পড়ে যাবে। তাছাড়া আশপাশে যেসব জলাশয় বা ডোবা রয়েছে সেখানে মাছের পাশাপাশি পানি ফল চাষ করা হচ্ছে।
একই কথা বলেন উপজেলার ছয়ঘরিয়া গ্রামের কৃষক জবেদ আলী ও ফজলুল হক। তারা বলেন,এমন সংকটে পড়তে হবে আগে বুঝতে পারলে পাট চাষই করতাম না। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার পাট ভালো হয়েছে। কিন্তু জাগ দিতে না পারলে ক্ষতি গ্রস্ত হতে হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরার সাতটি উপজেলায় ১২ হাজার ৫৪০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৬৭০ হেক্টর বেশি। চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১১ হাজার ৮৭০ হেক্টর জমি। এবার জেলায় পাট উৎপাদনের লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৩৯২ বেল্ট, যা গত মৌসুমে ছিল ১ লাখ ৪৭ হাজার ৯১ বেল্ট। এ হিসাবে চলতি মৌসুমে ৩০১ বেল্ট উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা বেড়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের উপ-পরিচালক মো.সাইফুল ইসলাম বলেন,জেলার অনেক এলাকার কৃষক বিপাকে পড়েছেন পাট পচানো নিয়ে। মুশকিল হচ্ছে, যেসব উন্মুক্ত জলাশয় বা ডোবা রয়েছে তাতে মাছ ও পানি ফল চাষের কারণে পাট জাগ দেয়া যাচ্ছে না। তার পরও তাদের বিকল্প উপায়ে পাট পচানোর পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে পাটের আঁশ ছাড়িয়ে ছোট ছোট ডোবা বা বিলের পানিতে পচানো যেতে পারে। এর পাশাপাশি যেসব এলাকায় নদী বা খাল রয়েছে সেখানে নিয়েও দ্রুত পচানোর পরামর্শ দেয়া হচ্ছে কৃষককে।