দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে ময়মনসিংহ খাদ্য বিভাগ,
সিন্ডিকেট উৎকোচ কমিশন বাণিজ্য চলছে উপর থেকে নীচ
ময়মনসিংহের ত্রিশালে খাদ্যগুদাম রয়েছে ২টি। গৌরীপুরে ২টি। হালুয়াঘাটে ৩টি সহ উপজেলার প্রত্যেকটিতে ১টি করে খাদ্যগুদাম রয়েছে। মাঠ থেকে কৃষকদের মাধ্যমে খাদ্য গুদামগুলোতে ধান,মিলারদের মাধ্যমে চাউল সংগ্রহ এবং সংরক্ষণ করে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক এবং ডিসি ফুড পর্যন্ত উন্নত মানের ধান-চাউল পৌছানো সহ শতভাগ খাদ্য-শস্য মজুদ এবং তদারকীতে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও ডিসি ফুডের সততা পূর্ণ দায়িত্ব এবং কর্তব্য পুরোটাই নির্ভর করে গুণগত মান উত্তীর্ণ ধান চাউল খাদ্য গুদাম গুলোতে সংগ্রহ-সংরক্ষন করে যথাযথভাবে মনিটরিং করা।
ময়মনসিংহের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক হলেন, আবু নঈম মোহাম্মদ শফিউল আলম এবং ডিসি ফুডের নাম আব্দুল কাদের।
দুর্ভাগ্যজনক কথা এই আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক এবং ডিসি ফুড যুগপৎভাবে ময়মনসিংহের বৃহৎ কৃষি অঞ্চলের অগনিত কৃষকদের মুখে ছাই দিয়ে গড়ে তুলেছেন একটি দৃশ্যমান সিন্ডিকেট। ওসি এলএসডিরা বারংবার অভিযোগ করে জানান, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রককে টনপ্রতি ৬০টকা ঘুষ না দিলে ধান- চাউল গুদামে উঠেনা, ফলে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের বিভিন্ন ধরনের অবিবেচক কর্মকান্ডে ধান-চাউল সংগ্রহ বারবারই
বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবু নঈম মোহাম্মদ শফিউল আলম নিয়ম নীতির কোন তোয়াক্কা না করেই অব্যাহত ভাবে মিলারদের মাধ্যমে নিম্নমানের চাউল ক্রয় করেন। এক্ষেত্রে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক শফিউল আলম প্রতিটন চাউলের
৬০ টাকা যেমন হাতিয়ে নেন তেমনি খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিজেও এসব নীচু, মানের চাউল কিনে ৬০ টাকা নিজের পকেটে ভরেন। জানা গেছে, এসব ভয়ঙ্কর চোর্য্যবৃত্তির ঘটনা সত্য বলে মিলাররা স্বীকার করেছেন। অন্যদিকে আরও ভয়ানক চৌর্য্যবৃত্তি ও অতিরিক্ত ঘুষের কথা উঠেছে ডিসি ফুড আব্দুল কাদেরের বিরুদ্ধে। আব্দুল কাদের প্রতিটন চাউলের জন্য ১৮০ টাকা এক প্রকার প্রকাশ্য ভাবেই হাতিয়ে নিচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, এই প্রকাশ্য ঘুষচুরি এবং নিম্নমানের চাউল গুদামে ঢুকিয়ে দেয়ার সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে ডিসি ফুড অফিসের প্রধান সহকারী সাইদুর। অভিযোগে আরও জানাগেছে, ডিসি ফুড আব্দুল কাদেরের বাড়তি অর্থ কামিয়ে নেওয়ার আরও অপশন রয়েছে। ময়মনসিংহের প্রতিটি খাদ্য গুদামের ওসিএলএসডির সাথে কাদেরের রয়েছে নিবিড় সখ্যতা। এদের মাধ্যমে ডিসি ফুড আব্দুল কাদের প্রতিমাসে মাসোহারা নিয়ে থাকেন ১০ হাজার টাকা। এইভাবে ধাপে ধাপে ঘুষের বাড়তি উপার্জন ময়মনসিংহের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবু নঈম মোহাম্মদ শফিউল আলম এবং ময়মনসিংহের ডিসি ফুড আব্দুল কাদেরের প্রতি মাসে আদার হয় লক্ষ লক্ষ টাকা যা প্রতি বছর কিংবা ধান চাউল ক্রয়ের মৌসুম শেষে অংকের হিসেবে দাঁড়ায় শুধু উৎকোচ বানিজ্য বাবদ ই কোটি কোটি টাকা!
এভাবে দিনের পর দিন বছরের পর বছর নিম্ন মানের চাউল ক্রয় করা তাদের অভ্যাসে
দাঁড়িয়েছে কারণ এখানে দেখভাল করা বা • মনিটরিং করার কেউ নেই। নিজেরাই এখানে রাজা বা সর্দার।
জানাগেছে, খাদ্য গুদামে কোন মিলার চাউল দিতে চান না। কারণ স্পষ্টতঃই খাদ্য গুদাম চলছে এখন একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। যার ফলে এর সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায় বিভিন্ন চাউলের বাজারে যেখানে হামেশাই চাউলের দর ওঠানামা করছে। মাঝ খানে সাধারণ কৃষকদের মাশুল গুনতে হচ্ছে।
অভিযোগের পাহাড় রয়েছে ময়মনসিংহ জেলার উপজেলা গুলোর ওসিএলএসডিদের বিরুদ্ধে। তবে তারা স্বীকার করেছে, তাদের ঘুষ খেতে হয় উর্ধতন কর্মকর্তাদের খুশী করার জন্য। তাদের অভিমত, ঘুষ না খেলে সমস্যা আছে অনেক।
অন্যদিকে ডিসি ফুড (জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক) আব্দুল কাদেরের হ্যাডামের কারণে সম্প্রীতি ত্রিশাল উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইলিয়াসের সাথে ঘুষের ভাগাভাগি নিয়ে অশ্লীল এবং উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে যা সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মচারীরাই প্রত্যক্ষ করেছেন।
প্রত্যষদর্শীরা জানান মরমনসিংহেরা আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবু নঈম মোহাম্মদ শফিউল আলম, ডিসি ফুড (জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক) আব্দুল কাদের, প্রধান সহকারী সাইদুর এরা উৎকোচ বানিজ্য, সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রন, প্রভৃতি মারাত্বক অব্যবস্থাপনার সাথে একই সূতায়
বাঁধা। ফলে ময়মনসিংহ খাদ্য বিভাগের বছরের পর বছর বেহাল অবস্থা ঘটছে। এর থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হচ্ছে ময়মনসিংহ দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের হস্তক্ষেপ। একটি স্বচ্ছ তদন্ত দুদক শুরু করলেই কেঁচো খুড়তে সাপ বেরুতে বাধ্য, কারন ময়মনসিংহ জেলার খাদ্য বিভাগের দুর্নীতি ঘটছে উপর থেকে। তাদেরকে সনাক্ত করে আইনানুগ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জন্য ময়মনসিংহের সচেতন মহল ময়মনসিংহ দূর্নীতি দমন কমিশন দুদকের উর্ধতন কর্মকর্তাদের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।