হাজারও অপকর্মের হোতা মক্ষিরানী পিয়াসা বহু নারীতে আসক্ত এহসান আব্দুল্লাহ’র অপরাধের ইতিবৃত্ত
স্টাফ রিপোর্টার :
(পিয়াসা ধরা-ছোঁয়ার বাহিরে থাকার কারণ, উচ্চ শ্রেণীর সাথে অসামাজিক নেটওয়ার্ক তৈরিতে সক্ষম, অন্যদিকে এহসান আব্দুল্লাহ, শেখ হেলাল এবং শেখ তন্ময়ের ঘনিষ্টজন হয়ে সকল অপরাধে অপরাধী হয়েও রয়েছে অধরা।)
বেশ কয়েক বছর যাবৎ বিভিন্ন অপরাধের ঘটনার কার্যক্রমে মিডিয়া পাড়ায় একটি নাম বারবার উঠে এসেছে ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা। রুপ যৌবন সৌন্দর্য্য উপস্থাপন করে পিয়াসা সোস্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন অসামাজিক ক্লাব পাড়ায় নিজের অবস্থানটি তৈরি করেছে শক্ত ভাবে। পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ থেকে শুরু করে র্যাবের বড় অফিসার কিংবা সেনা বাহিনীর উচ্চ পদস্থ কোন অসৎ কর্মকর্তাসহ কে নেই তার তালিকায়। চতুর পিয়াসা বুঝতে পেরেছে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে শতশত ইলেট্রনিক্স মিডিয়া ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিক ও সৎ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ঠেকাতে হলে প্রয়োজন ক্ষমতা তাই তার মূল টার্গেট উচ্চবৃত্ত সম্পদশালী পরিবারের সন্তান এবং সরকারী বেসরকারী পর্যায়ে ক্ষমতাবান কোন ব্যক্তি। পিয়াসা ও এহসান আব্দুল্লাহ’র একাধিক পুরুষ ও নারীর সাথে সম্পর্ক বৈধ অবৈধ সম্পর্ক থাকার পরেও তাদের পূর্বে উভয়ের স্বামী-স্ত্রী সংসার থাকা অবস্থায় জেনে শুনে একজন আরেকজনকে বিবাহ করার কারণ হচ্ছে দুজনই অপরাধ জগতের মানুষ। এদেরকে নিয়ে অনুসন্ধান করলে সংবাদের প্রতিবেদকের হাতে ১৮০ পৃষ্ঠার বিভিন্ন অপরাধের ফিরিস্তি উঠে আসে। মাত্র কিছুদিন পূর্বে এহসান আব্দুল্লাহ, পিয়াসার মায়াজালে নিজেকে জড়িয়ে নিজের সন্তানসহ স্ত্রী নাজিবা নাহিদ এর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে আবার পিয়াসা কে বিবাহ করার কাবিননামায় নাজিবা নাহিদ ও তার সন্তানকে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে পূর্বের স্ত্রী নাজিবা নাহিদ কে সাক্ষী হিসেবে কাবিননামায় স্বাক্ষর করায়। উঠে আসে নাজিবা নাহিদ কে শারিরীক ও মানসিক অত্যাচার করার লোম হর্ষক কাহিনী। এ বিষয়ে থানা ও আদালতে একাধিক অভিযোগ পাওয়া যায়। নিজের সন্তানকে নাজিবা নাহিদ এর কোল থেকে ছিনিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়ে এহসান আব্দুল্লাহ তার পূর্বের স্ত্রী নাজিবা নাহিদ এর শুভাকাঙ্খিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজির নাটক সাজিয়ে মামলা করার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। জানা যায় এহসান আব্দুল্লাহ, শেখ হেলাল ও শেখ তন্ময়ের ঘনিষ্ঠজন সেই সুবাদে তার পরিচালিত বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অবৈধ অনেক কার্যক্রম চলে। যার মধ্যে অন্যতম তিতাস গ্যাসের লাইনসহ রয়েছে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার শুভঙ্করের যাদু। খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায় টাংগাইলের ছাত্র-জনতাকে হত্যা করার পিছনে হুকুমদাতা ও পৃষ্ঠপোষকতার বিশাল একটি অবস্থানে ছিল এহসান আব্দুল্লাহ। এত অপরাধে অপরাধী হয়েও সে এখনও রয়েছে অধরা। এসব বিষয় নিয়ে এহসান এবং পিয়াসার নিকট থেকে বক্তব্য নেওয়ার লক্ষ্যে অনেক যোগাযোগের পরেও তাদেরকে না পেয়ে, তাদের মুঠো ফোনেও তাদেরকে কল দিলে, তারা কল রিসিভ করে না। অন্যদিকে কে এই পিয়াসা?
গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি ঘটনায় আলোচনায় এসেছে ‘পিয়াসা’ নামটি। পুরো নাম ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা। মডেল হিসেবে পরিচিত এই নারী নানান অপরাধে জড়িত বলে জানিয়ে আসছে প্রশাসন। ইতিমধ্যে উচ্চবিত্তের সন্তানদের ব্ল্যাকমেইলিংয়ে জড়িয়ে অবশেষে বাসায় বিপুল মাদকসহ তিনি কয়েকবার আটক হয়েছেন। বিপুল পরিমাণ মদ, ইয়াবা ও সিসাসহ মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসাকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবি।
মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও তার সহযোগী মরিয়ম আক্তার মৌ সহ তাদের রয়েছে বিশাল সংঘবদ্ধ ব্ল্যাকমেইল চক্র। তারা উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের পার্টির নামে বাসায় ডেকে মদ ও ইয়াবা খাইয়ে আপত্তিকর ছবি তুলে পরে ব্ল্যাকমেইল করে ধান্দাবাজি করে আসছে এই চক্রটি। বর্তমানে মিতালী গ্রুপ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাদকাসক্ত স্বামী পাওয়াতে পিয়াসার ব্যবসা এখন আকাশ ছোঁয়া। সমাজের সবচেয়ে উঁচু শ্রেণীর বখাটে ছেলে-মেয়েদের ব্যবহার করে পিয়াসা সেজেসে এখন মক্ষিরানী।
২০১৭ সালে পিয়াসা নামটি আলোচনায় এসেছিল। উচ্ছৃঙ্খল জীবন যাপন করায় সে বছর তাকে তালাক দেন দেশের প্রথম সারির জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিমের ছেলে সাফাত হোসেন। এ নিয়ে সামাজিক মহলে আলোচিত হন তিনি। তবে খবরের পাতায় তার নাম আসে ২০১৯ সালে। সে বছর দিলদার আহমেদ সেলিম তার সাবেক পুত্রবধূর বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। তার সেই সাবেক পুত্রবধূর নাম ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা। এই পিয়াসাই সেই পিয়াসা। চাঁদা দাবির অভিযোগে ২০১৯ সালের ৫ মার্চ পিয়াসার বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন দিলদার আহমেদ।
কয়েক বছর আগে রাজধানীর গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় মোসারাত জাহান (মুনিয়া) নামে এক তরুণীর মরদেহ। ঘুরে ফিরে এখানেও আলোচনায় পিয়াসার নাম। ঐ তরুণীর বোন নুসরাত জাহান বাদী হয়ে মামলা করে। মামলার এজাহারে উঠে আসে পিয়াসার নাম। এর রেশ কাটতে না কাটতেই আবার আলোচনায় সেই পিয়াসা। জানা যায় এহসান আব্দুল্লাহ কে ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল করে বিয়ে করে তার পূর্বের সংসারটি সন্তানসহ ভেঙ্গে দেয়। উল্টো এহসান আব্দুল্লাহ’র পূর্বের স্ত্রীর বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ ছবি এডিটিং করে বিভিন্ন নিউজ পোর্টাল ও গণমাধ্যমে তাকে হেও পতিপন্ন করার উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে নীল নকশা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অর্থ ব্যয় করে সংবাদ প্রকাশ করে সামাজিকভাবে মানহানী করেছে। এ বিষয়ে বিজ্ঞ আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়।
কে এই এহসান আব্দুল্লাহ?
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি একটি গ্রুপ অব কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক। অর্থবৃত্ত এবং ক্ষমতার তোরজোড়ে মানুষকে মানুষ মনে করে না। নিজের স্ত্রীকে মারধর করা মানসিকভাবে কষ্ট দেওয়া এবং গায়ে হাত তুলে রক্তাক্ত করা, এমনকি নিজের সন্তানকে স্ত্রীর নিকট থেকে ছিন্তাই করে নিয়ে যাওয়া, ভয় দেখিয়ে একটি পরিবারকে ব্ল্যাকমেইল করা তার কাজ। কিছু দেশ ও দেশের বাহিরের অনলাইন পোর্টালকে ভুল বুঝিয়ে কিংবা ব্যক্তিগত খাতিরে অত্যাচারিত ব্যক্তির সাক্ষাৎকার ব্যতীত এক তরফা সংবাদ করিয়ে মানহানীর চেষ্টা করেছে। এমনটাই অভিযোগ তুলে ধরেছে গুলশানে বসবাসকারী নাজিবা নাহিদ খান। একান্ত সাক্ষাৎকারে নাজিবা নাহিদ খান তার প্রাক্তন স্বামী এহসান আব্দুল্লাহ’র বিরুদ্ধে তার অত্যাচারের ভয়াবহতার বিবরণে বারবার শিহরে উঠছিল। এবিষয়ে নাজিবা নাহিদ খান সংশ্লিষ্ট থানায় সাধারণ ডায়েরী সহ অভিযোগ দায়ের করেন। বিগত ইং ০৬/০৭/২০১৮ তারিখে সৈয়দ এহসান আব্দুল্লাহ এর সহিত বিবাহ হয়। অতঃপর সৈয়দ এহসান আব্দুল্লাহ এর ঔরসে এবং নাজিবা নাহিদ খান এর গর্ভে একটি পুত্র সন্তান হয়, যার নাম সৈয়দ ইলহান আব্দুল্লাহ, জন্ম তাং: ১২/০৪/২০১৯। বিবাহের কিছুদিন পরে নাজিবা নাহিদ খান এর স্বামীর অনেক মেয়েদের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক সহ বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপের বিষয়ে জানতে পারেন তিনি। তার এই ধরনের অনৈতিক কার্যকলাপের বিষয়ে সংশোধনের চেষ্টা করিয়া প্রতিকার না হওয়ায় বিগত ইং ২৬/০৭/২২ তারিখে কাজী অফিসের মাধ্যমে এহসান আব্দুল্লাহকে তালাকের নোটিশ প্রদান করে নাজিবা নাহিদ খান। অতঃপর এহসান আব্দুল্লাহ নিজেকে সংশোধন করিয়া সুখে শান্তিতে দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত করিবে ও নাজিবা নাহিদ খানকে কোন নির্যাতন করবে না এই প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় ইং: ২৮/০৯/২২ তারিখে একটি আপোষ চুক্তিপত্র হইলে নাজিবা নাহিদ খান তালাক নোটিশ প্রত্যাহার করিয়া পুনরায় দাম্পত্য জীবন শুরু করে। কিন্তু তাহার স্বভাবের কোন পরিবর্তন হয় নাই এবং নাজিবা নাহিদ খান এর উপর আরো নির্যাতন শুরু করে, যে কারণে নাজিবা নাহিদ খান এর শিশু সন্তানের কথা চিন্তা করিয়া গুলশান থানাধীন নাজিবা নাহিদ খান এর পিত্রালয়ে চলে আসে।
অতঃপর নাজিবা নাহিদ খান জানতে পারে যে, নাজিবা নাহিদ খান এর অজান্তে তার বান্ধবী ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা এর সহিত অবৈধ সম্পর্ক হইয়াছে। উক্ত ফারিয়া মাহবুব পিয়াশাকে বিবাহ করার কুমতলবে ইং: ০৩/১২/২২ তারিখে নাজিবা নাহিদ খান কে তালাক নোটিশ প্রদান করে। এহসান আব্দুল্লাহর সহিত দাম্পত্য সম্পর্ক রাখা নাজিবা নাহিদ খান এর জন্য হুমকি হওয়ায় আপোষের ভিত্তিতে উক্ত তালাক কার্যকরী হইয়াছে। অতঃপর ইং: ২১/০৮/২৩ তারিখ সকালে নাজিবা নাহিদ খান তালাকপ্রাপ্ত স্বামী এহসান আব্দুল্লাহ নাজিবা নাহিদ খান কে ফোন করে বলে যে শিশু বাচ্চা সৈয়দ ইলহান আব্দুল্লাহ এর সহিত দেখা করিবে। যে কারণে তাহাকে বনানীর বাসায় নিয়ে যেতে বলে। অন্যথায় পুলিশের লোকজনের সহায়তায় নাজিবা নাহিদ খান কে সহ শিশু সন্তানকে নিয়ে যাইবে বলে হুমকি দেয়। ফলে নাজিবা নাহিদ খান আতঙ্কিত হইয়া তার বনানী বাসায় যায়। নাজিবা নাহিদ খান বনানী বাসায় যাওয়ার সাথে সাথে ইং: ২১/০৮/২৩ তারিখে বেলা আনুমানিক ১১.৩০ ঘটিকায় মেইনগেট বন্ধ করে নাজিবা নাহিদ খান কে তাদের বাসায় থাকতে বাধ্য করে। ইহার কিছুক্ষন পরে কাজী অফিস থেকে শাহ আলম নামে একজন কাজী নাজিবা নাহিদ খান এবং সৈয়দ এহসান আব্দুল্লাহ এর সহিত ফারিয়া মাহবুব পিয়াসার নিকানামা লিপিবদ্ধ করিয়া উক্ত নিকা নামায় নাজিবা নাহিদ খান কে সাক্ষী হিসেবে স্বাক্ষর করিতে বলে। নাজিবা নাহিদ খান স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করিলে তাকে ছাদ থেকে ফেলে দেওয়ার এবং বিভিন্ন হুমকি প্রদর্শন করে জোরপূর্ব নিকাহনামায় স্বাক্ষর নেয়। পরবর্তীতে নাজিবা নাহিদ খান শিশু বাচ্চা সহ নিজ বাসায় চলে আসে। পরে নাজিবা নাহিদ খান শিশু বাচ্চাকে জোরপূর্বক নিয়ে যাওয়ায় এবং এই ব্যাপারে আইনের আশ্রয় না নেওয়ার হুমকি দেয়। সৈয়দ এহসান আব্দুল্লাহ তৎকালীন ক্ষমতাধীন স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের কিছু প্রভাবশালী লোকজনের ছত্রছায়ায় ছিল বিধায় আইনের আশ্রয় গ্রহণ করিতে বিলম্ব হয়েছে বলে জানায় সংবাদের প্রতিবেদককে। দূর্নীতি দমন কমিশন এ বিষয় নিয়ে অনুসন্ধান করলে এই দুইজন অপরাধীর (এহসান আব্দুল্লাহ ও পিয়াসা) বেরিয়ে আসবে বিশাল অবৈধ সম্পদের পাহাড়।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের এই প্রেক্ষাপটে কোন অপরাধী পার পাবে না, সবাই আসবে আইনের আওতায়। এমনটাই দাবী সবার। আগে সোনার বাংলা পরে অন্য সব সাধু সাবধান।